পাসপোর্ট করতে লাগবে না পুলিশ ভেরিফিকেশন | এনআইডি দিয়ে করা যাবে পাসপোর্ট

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পাসপোর্ট করতে লাগবে না পুলিশ ভেরিফিকেশন: এখন থেকে পাসপোর্ট পেতে আর পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হবে না। ডিসি সম্মেলনে পাসপোর্ট সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এনআইডি কার্ড এবং জন্ম নিবন্ধনের মতো পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিকের অধিকার। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পরদিনই সরকার পাসপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়া থেকে বাধ্যতামূলক পুলিশ ভেরিফিকেশনের নিয়ম তুলে নিতে চলেছে। পরিবর্তে, নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তথ্য যাচাই করে পাসপোর্ট দেওয়া হবে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সারসংক্ষেপ অনুমোদন করেছেন বলে জানিয়েছেন তার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করলে এখন পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট পাওয়া যাবে।

এর আগে, রবিবার, প্রধান উপদেষ্টা ডিসি সম্মেলনে এই পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করেন। এরপর সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগ জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিত্তিতে নাগরিকদের পাসপোর্ট দেওয়ার উদ্যোগ নেয়।প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফেকশন লাগবে কেন, নাগরিকদের অনেকগুলো অধিকারের মধ্যে এটাও একটি। আমি চোর নাকি ডাকাত সেটা ভিন্নভাবে পুলিশ বিচার করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জন্ম সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে প্রয়োজন হয়নি। পাসপোর্টও এ দেশের নাগরিকের পরিচয়পত্র। এখানে পুলিশ ভেরিফিকেশন কেন লাগবে। আমরা আইন করে দিয়েছি এখন থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না।’জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের (এনআইডি) ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট দেবে সরকার। এখন থেকে পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ থেকে পাঠানো এ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

পুলিশ ভেরিফিকেশন কী?

বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম সেবা হলো পুলিশ ভেরিফিকেশন বা ক্রিমিনাল রেকর্ড সার্টিফিকেট। এই সার্টিফিকেট বিভিন্ন উদ্দেশ্যে প্রয়োজন। পুলিশ প্রশাসন দেশের নাগরিকদের এই পরিষেবা প্রদান করে। তবে এই পুলিশি চেক নিয়ে অনেকের মনে নানা প্রশ্ন রয়েছে। আসুন দেখি এটি কী, কেন এটি করা হয়, কোন তথ্যের প্রয়োজন এবং কত সময় লাগে। সাধারণভাবে, সত্যতা যাচাইকরণ হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে পুলিশ যাচাই করে যে চাকরির আবেদনকারীর দেওয়া তথ্য, পাসপোর্ট, লাইসেন্স, বা অন্য কোনও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র সঠিক কিনা। যাচাই-বাছাইয়ের সময়, প্রার্থীর প্রদত্ত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের পাশাপাশি, তাদের চরিত্র এবং সামাজিক অবস্থান সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

কোন কোন ক্ষেত্রে পুলিশি তল্লাশি চালানো যেতে পারে?

০১. সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি (ঐচ্ছিক)
০২. পাসপোর্ট প্রাপ্তি
০৩. বিভিন্ন ধরণের লাইসেন্স প্রাপ্তি
০৪. বিভিন্ন মূল কর্মক্ষমতা সূচক (KPI) ইত্যাদির ব্যবহার।

পাসপোর্ট পরিষেবা সহজ করার উদ্যোগ

পাসপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুততর করার জন্য সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে একটি হলো জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তথ্য যাচাই করে পাসপোর্ট প্রদান, যা পুলিশ যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা কমাবে।

নতুন প্রস্তাবিত ব্যবস্থা:

০১. জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে পাসপোর্ট
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাই করে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে, যাতে আবেদনকারীদের আলাদাভাবে পুলিশ যাচাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে না হয়।

০২. নাবালকদের জন্য জন্ম সনদ
১৮ বছরের কম বয়সী নাগরিকদের জন্য, জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তে জন্ম সনদ যাচাই করে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।

০৩. বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের জন্য সুবিধা
বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য, পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সময় পুলিশ যাচাই ছাড়াই অনলাইনে যাচাই করা জন্ম সনদের ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।

০৩. পাসপোর্ট পুনঃপ্রদানের সুবিধা প্রদান
পাসপোর্ট পুনঃপ্রদানের ক্ষেত্রে, যদি মৌলিক তথ্য (নাম, পিতামাতার নাম, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান) পরিবর্তন না হয়, তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাই করার পরেই পাসপোর্ট প্রদান করা যাবে।

০৪. তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে তদন্ত সম্পূর্ণ বলে বিবেচিত হবে।

যদি পাসপোর্ট আবেদনের তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন ডাটাবেস দিয়ে যাচাই করা হয়, তাহলে এটি “বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ, ১৯৭৩ এর ধারা ৫(২) এর অধীনে প্রয়োজনীয় তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে” বলে বিবেচিত হবে। এতে অতিরিক্ত সময় অপচয়ের সুযোগ কমে যাবে।

পাসপোর্ট পরিষেবা এবং এর গুরুত্ব

০১. বাংলাদেশের এক কোটিরও বেশি নাগরিক বিদেশে কর্মরত। প্রতি মাসে গড়ে ৩০ হাজার বাংলাদেশি নতুন কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে যান। এছাড়াও, উচ্চশিক্ষা, স্থায়ী বসবাস সহ বিভিন্ন কারণে বিপুল সংখ্যক নাগরিকের পাসপোর্টের প্রয়োজন হয়।

০২. গড়ে প্রতিদিন ৩০ হাজার আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয় এবং ২৫-২৮ হাজার পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। দেশ ও বিদেশের পাসপোর্ট অফিসগুলিতে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক আবেদনপত্র জমা দেওয়া এবং মুদ্রণ করা হয়।

০৩. ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থার সুবিধা
বর্তমান ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থা অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়া, ফি প্রদান, নির্ধারিত দিনে বায়োমেট্রিক তথ্য সরবরাহ এবং পরে অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহের সুবিধা প্রদান করে।

০৪. পুলিশ ভেরিফিকেশনের ঝামেলা কমবে
কখনও কখনও, পুলিশ ভেরিফিকেশন সময়মতো সম্পন্ন না হওয়ার কারণে অথবা অতিরিক্ত নথি যাচাইয়ের কারণে আবেদনকারীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। নতুন ব্যবস্থা এই জটিলতাগুলি কমাবে।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ আমি মো: নূরে আলম সিদ্দিকী পেশায় একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট এবং ব্লগ, ইউটিউব এবং ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর