জেনে নিন বিকাশের নিরাপত্তা টিপস: আপনার টাকা সুরক্ষিত রাখুন

✍ পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা:

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বিকাশের নিরাপত্তা টিপস:বর্তমানে বাংলাদেশে ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে বিকাশ অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম। তবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার ঘটনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্ট এবং লেনদেনকে সুরক্ষিত রাখতে কী ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত? এই ব্লগে আমরা বিকাশের নিরাপত্তা টিপস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

বিকাশ নিরাপত্তার গুরুত্ব

কেন বিকাশ অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ?

  • মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণার শিকার হলে আপনার সম্পূর্ণ অর্থ লুট হতে পারে।
  • অনিরাপদ পিন বা অসতর্কতা প্রতারণার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • সঠিক সচেতনতা না থাকলে আপনি সহজেই প্রতারকদের ফাঁদে পড়তে পারেন।

বিকাশ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ

  • স্ক্যাম কল ও ফিশিং আক্রমণ: প্রতারকরা ফোন বা এসএমএসের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করার চেষ্টা করে।
  • ওটিপি (OTP) ও পিন শেয়ার করার বিপদ: প্রতারকরা কখনো কখনো নিজেকে বিকাশ প্রতিনিধি দাবি করে ওটিপি বা পিন জানতে চায়।
  • সামাজিক প্রকৌশল প্রতারণা (Social Engineering Scam): যেখানে প্রতারকরা বিভিন্নভাবে বিশ্বাস অর্জন করে অর্থ হাতিয়ে নেয়।

বিকাশ একাউন্টের নিরাপত্তা রক্ষায় করণীয়:

যেহেতু বিকাশ এ নিয়মিত লেনদেন করতে হয় এজন্য একটু সচেতনতা আমাদের অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে রক্ষা করতে পারে। আপনার বিকাশ একাউন্ট এবং লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কিছু পরামর্শ নিম্নরুপঃ

বিকাশের নিরাপত্তা টিপস:আপনি যা করবেন:

১| সত্য, সঠিক, এবং পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফরমটি পূরন করুন। পরবর্তীতে, পিন ভুলে গেলে, মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে, অথবা, অন্য কোনো প্রয়োজনে, আপনার দেয়া এই তথ্যের মাধ্যমেই আপনার বিকাশ একাউন্টের মালিকানা যাচাই করা হবে।
২| আপনার পিন নম্বর, “সিক্রেট কোড”, এবং “সিকিউরিটি কোড” সবসময় গোপন রাখুন।
৩| আপনার “বিকাশ” লেনদেনের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং লেনদেন সম্পর্কে যথাযথভাবে অবগত থাকতে সবসময় আপনার নিজের “বিকাশ একাউন্ট” ব্যবহার করুন।
৪| প্রতিটি লেনদেনের পূর্বে এর বৈধতা এবং যথার্থতা নিশ্চিত করুন। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে “বিকাশ একাউন্ট নম্বর”, টাকার পরিমাণ, “সিকিউরিটি কোড”, “সিক্রেট কোড”, পিন, আপনার বিকাশ একাউন্ট এবং লেনদেন সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য ব্যবহার/ইনপুট দেয়ার সময় সতর্ক থাকুন।
৫| এজেন্ট পয়েন্ট থেকে ক্যাশ আউট এর সময় আপনার “বিকাশ মোবাইল মেন্যু” এর শুধুমাত্র “Cash Out from  Agent” অপশনের মাধ্যমেই ক্যাশ আউট করুন।
৬| প্রতিটি লেনদেনের পূর্বে এবং পরে আপনার একাউন্ট ব্যালেন্স চেক করুন।
৭| *247# ডায়াল করে প্রতিটি লেনদেনের পর “বিকাশ” থেকে প্রেরিত মেসেজের প্রাপ্তি সম্পর্কে নিশ্চিত হোন এবং মেসেজের মাধ্যমে পাওয়া ব্যালেন্স ইনফরমেশন এবং আপনার কাঙ্ক্ষিত ব্যালেন্সের মিল আছে কিনা তা যাচাই করে নিন।
৮। “বিকাশ” প্রেরিত কনফারমেশন মেসেজ পাওয়ার জন্যে আপনার মেসেজ ইনবক্স এ পর্যাপ্ত জায়গা রাখুন। ইনবক্স ফুল থাকলে আপনি এই কনফারমেশন মেসেজগুলো যথাসময়ে পাবেন না।
৯| মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব বিকাশ হেল্পলাইন ১৬২৪৭-এ জানান।
১০| যেকোনো তথ্যের প্রয়োজনে এবং তথ্যের যথার্থতা বা নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করার জন্যে বিকাশ হেল্পলাইন ১৬২৪৭-ই একমাত্র সঠিক এবং বিশ্বাসযোগ্য উৎস।

বিকাশের নিরাপত্তা টিপস :আপনি যা করবেন না:

_বিকাশের নিরাপত্তা টিপস আপনার টাকা সুরক্ষিত রাখুন
_                                                                                       বিকাশের নিরাপত্তা টিপস আপনার টাকা সুরক্ষিত রাখুন
১| পিন নম্বর, “সিকিউরিটি কোড” এবং “সিক্রেট কোড” কখনই লিখে রাখবেন না এবং অন্য কাউকে জানতে দিবেন না। “বিকাশ”  কর্তৃপক্ষ কখনো আপনার পিন নম্বর, সিক্রেট কোড, অথবা সিকিউরিটি কোড  জানতে চাইবেন না।
২| লটারী জেতা, পুরষ্কার বা প্রতিযোগিতা, এই ধরনের কোনো মেসেজ বা ফোন কল এ সাড়া দিবেন না। এ ধরনের ফোন কল বা মেসেজের সত্যতা যাচাই করার জন্যে বিকাশ হেল্পলাইন ১৬২৪৭-এ যোগাযোগ করুন।
৩| পরিচিত ও নির্ভরযোগ্য ব্যাক্তি ছাড়া আপনার মোবাইল ফোন কাউকে ধার দিবেন না।
৪| নিজের লেনদেনের জন্যে অন্য কারো “বিকাশ একাউন্ট” ব্যবহার করবেন না। “বিকাশ” রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ ফ্রি, তাই নিজ মোবাইল নম্বরটিই রেজিস্টার করে নিন এবং নিজেই ব্যবহার করুন।
৫| কখনই “ Send Money” অপশনের মাধ্যমে এজেন্টের ব্যাক্তিগত একাউন্ট নম্বরে ক্যাশ আউট করবেন না।
বিঃ দ্রঃ প্রযুক্তিগতভাবে “বিকাশ” টাকা লেনদেনের একটি নিরাপদ মাধ্যম মাত্র, “বিকাশ” সেবা ব্যবহারে এবং ব্যবহারের প্রক্রিয়ায় গ্রাহকের ভুল, ভুল ব্যাখ্যা বা জালিয়াতির সুত্রপাত হলে “বিকাশ” কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।
উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র গ্রাহক সুবিধার্থে প্রদেয় এবং কোনো চুক্তি হিসেবে বিবেচ্য নয়। সকল তথ্য মুদ্রণের সময়কাল পর্যন্ত হালনাগাদ। “বিকাশ” কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে যেকোনো সময়ে সেবার ধরন, বৈশিষ্ট্য, সুবিধা, এবং চার্জ যথাযথ উপায়ে পরিবর্তন করতে পারবেন। সকল সেবার উপর বিকাশ লিমিটেড এর নির্ধারিত শর্ত প্রযোজ্য।বিকাশের নিরাপত্তা টিপস

বিকাশ নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় বিকাশের নিরাপত্তা টিপস :

১. শক্তিশালী ও নিরাপদ পিন ব্যবহার করুন:

  • পিন নম্বর কখনো জন্মতারিখ বা সহজ অনুমেয় সংখ্যা ব্যবহার করবেন না।
  • প্রতিনিয়ত পিন পরিবর্তন করুন এবং এটি গোপন রাখুন।
  • কোনো অবস্থাতেই কারো সঙ্গে পিন শেয়ার করবেন না।

২. প্রতারকদের ফাঁদ থেকে সাবধান থাকুন:

  • বিকাশ অফিস থেকে কোনো প্রতিনিধি কখনোই পিন বা ওটিপি জানতে চাইবে না।
  • অপরিচিত নম্বর থেকে আসা সন্দেহজনক ফোন কল বা এসএমএস এড়িয়ে চলুন।
  • কোনো অফার বা লটারির প্রলোভনে পড়ে তথ্য শেয়ার করবেন না।

৩. বিকাশ অ্যাপে নিরাপত্তা সেটিংস চালু করুন

  • অ্যাপের বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন (Fingerprint/Face ID) চালু করুন।
  • দুই স্তরের অথেনটিকেশন ব্যবহার করুন, যা লেনদেনকে আরও নিরাপদ করে তুলবে।
  • লেনদেন নোটিফিকেশন চালু রেখে প্রতিটি লেনদেনের আপডেট পান।

৪. অজানা লিংক ও অ্যাপ থেকে দূরে থাকুন

  • শুধুমাত্র বিকাশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকে লেনদেন করুন।
  • কোনো তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ বা লিংক থেকে বিকাশে লগইন করবেন না।
  • সন্দেহজনক এসএমএসে দেওয়া লিংকে ক্লিক করবেন না।

৫. বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্লক বা লিমিটেড হলে কী করবেন?

  • দ্রুত বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে (১৬২৪৭) যোগাযোগ করুন।
  • প্রয়োজনে নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যান।
  • বিকাশ অ্যাপের ‘হেল্প’ অপশন ব্যবহার করে সমাধান নিন।

৬.অজানা বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠানোর আগে যাচাই করে নিন।

01. ভুল নম্বরে টাকা পাঠানো এড়াতে।
02. বিকাশ অ্যাপে নম্বর টাইপ করার পর নামটি পরীক্ষা করুন।
03. টাকা পাঠানোর পর SMS নিশ্চিতকরণ পরীক্ষা করুন।
04. ভুল করে অন্য কাউকে টাকা পাঠালে, অবিলম্বে 16247 নম্বরে যোগাযোগ করুন।

৭. ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার বিকাশ নম্বর শেয়ার করবেন না।

০১. অনেকেই ফেসবুক বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তাদের বিকাশ নম্বর প্রকাশ করে, যা বিপজ্জনক হতে পারে।
০২. প্রতারকরা আপনার নম্বর পেতে এবং আপনাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলার জন্য বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করতে পারে।
০৩. আপনার বিকাশ নম্বরটি শুধুমাত্র বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করুন।

জরুরি অবস্থায় করণীয়:

বিকাশ একাউন্ট হ্যাক হলে কী করবেন?

  • দ্রুত বিকাশ কাস্টমার সার্ভিসে কল করুন এবং অ্যাকাউন্ট ব্লক করার অনুরোধ জানান।
  • প্রয়োজনে নিকটস্থ থানায় বা সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ জানান।

প্রতারণার শিকার হলে কী করবেন?

  • বিকাশের অফিসিয়াল কাস্টমার কেয়ার সাপোর্টে যোগাযোগ করুন।
  • বাংলাদেশ সাইবার অপরাধ তদন্ত বিভাগে অভিযোগ করুন।
  • প্রতারকের ফোন নম্বর ব্লক ও রিপোর্ট করুন।

উপসংহার:

বিকাশের নিরাপত্তা টিপস এই আলোচনায় বিকাশ ব্যবহারের সময় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আপনাকে বিকাশ ব্যবহার করার সময় নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করতে হলে সচেতনতা এবং সতর্কতা অপরিহার্য। প্রতারকদের কৌশল সম্পর্কে জানুন ও প্রতারণা এড়াতে সচেতন থাকুন এবং সবসময় নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন। পিন, ওটিপি বা ব্যক্তিগত তথ্য কখনোই অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন না। আপনার একটু সতর্কতা আপনার কষ্টার্জিত টাকা সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে।
তাই এতক্ষন পুরো আর্টক্যালে টি পড়ে বিকাশের নিরাপত্তা টিপস সম্পর্কে জানলে অবশ্যই অন্যদের মাঝে শেয়ার করুন।

 বিকাশের নিরাপত্তা টিপস এ বিষয়ে আপনার প্রশ্ন ও উত্তর FAQ :

১. বিকাশ পিন ভুলে গেলে কী করবেন? 

উত্তর: বিকাশ অ্যাপে Forgot PIN অপশন ব্যবহার করুন অথবা ১৬২৪৭ নম্বরে কল করুন।

২. বিকাশে প্রতারণামূলক ফোন কল এলে কী করবো?

 উত্তর: ফোন কেটে দিয়ে বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে রিপোর্ট করুন।

৩. বিকাশ অ্যাকাউন্ট লক হয়ে গেলে কী করবো? 

উত্তর: ১৬২৪৭ নম্বরে কল করে অথবা নিকটস্থ বিকাশ কেয়ার সেন্টারে যান।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ আমি মো: নূরে আলম সিদ্দিকী পেশায় একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট এবং ব্লগ, ইউটিউব এবং ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর

Leave a Comment